Usar la aplicación APKPure
Obtener বাঙালি জাতির উত্থান versión histórica en Android
বঙ্গবন্ধুর প্রত্যাবর্তন ও বাঙালি জাতির উত্থান: ইতিহাসের অবিচ্ছেদ্য আলেখ্য
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ শেষ। আত্মসমর্পণ করেছে পাকিস্তানি বর্বর জান্তারা। বাংলার আকাশে উড্ডীন লাল-সবুজের বিজয়ী পতাকা। স্বজন হারানোর চাপা বেদনা ও শৃঙ্খলমুক্তির আনন্দে উদ্বেলিত বাঙালি জাতি। কিন্তু সবার মনের কোণেই বিষাদের ঘনঘাটা। যার ডাকে আপামর বাঙালির এই যুদ্ধে নামা, যার জন্য বাংলাদেশের জন্ম, সেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তখন পাকিস্তানের অন্ধকার জেলে বন্দি। পাকিস্তানি জান্তারা তখনো তাকে হত্যার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তাই অজানা আশঙ্কায় বাঙালির বিজয়ের আনন্দ অপূর্ণই থেকে যায়।
পরাজয়ের ঠিক আগের রাতে জেলের মধ্যে দাঙ্গা লাগিয়ে হত্যার শেষ অপচেষ্টা করা হয় স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি ও রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধুকে। কিন্তু আন্তর্জাতিক চাপের কারণে তা আর বাস্তবায়ন করতে পারেনি পাকিস্তানি জান্তারা। অবশেষে ১৯৭২ সালের ৮ জানুয়ারি তাকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয় পাকিস্তানিরা। ৯ জানুয়ারি লন্ডন হয়ে, ১০ জানুয়ারি নিজের সৃষ্ট দেশে প্রত্যাবর্তন করেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
সেই বৃষ্টিস্নাত বিকালে, বঙ্গবন্ধুকে বহনকারী বিমানটি যখন তেজগাঁও বিমানবন্দরের রানওয়ে স্পর্শ করে, তখন ঢাকার রাস্তায় আনন্দঅশ্রুতে মথিত হতে থাকে লাখ লাখ জনতা। তাকে একনজর দেখেই যেনো হাফ ছেড়ে বাঁচে বাঙালি জাতি, ফিরে এসেছেন জাতির পিতা। 'জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু' স্লোগানে প্রকম্পিত হতে থাকে চারপাশ। বিমান থেকে নেমে বঙ্গবন্ধু সরাসরি চলে যান সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে।
এরপর নতুন করে দেশকে গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন আবেগী অথচ আত্মবিশ্বাসী কণ্ঠে। বঙ্গবন্ধুর মুখে দিকে তাকিয়ে, তার কণ্ঠের মূর্চ্ছনায়, আবেশিত হয়ে যায় পুরো বাংলাদেশ। প্রতিটি বাঙালির হৃদয় পরিণত হয় পুষ্পবৃষ্টির ফেনিল সায়রে। বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা এবং মুক্তিযোদ্ধাদের বীরোচিত বিজয় পূর্ণতা লাভ করে এই ঐতিহাসিক প্রত্যাবর্তনের মাধ্যমে। ১৬ ডিসেম্বর যুদ্ধে বিজয় লাভ হলেও, ১০ জানুয়ারি তা পরিপূর্ণতা পায়।
ছাত্রনেতা শেখ মুজিবের প্রথম প্রত্যাবর্তন:
১৯৪৭ সালের আগস্টে দুইভাগে ভাগ হলো ভারতবর্ষ, মধ্যখানে বিশাল ভূখণ্ডের ভারত আর তার পূর্ব ও পশ্চিম প্রান্তের দুই পৃথক সংস্কৃতি ও জাতিগোষ্ঠীকে নিয়ে গড়া হলো পাকিস্তান। শুধু ধর্মের মিল ছাড়া এই দুই বিচ্ছিন্ন ভূখণ্ডের জাতিগুলোর মধ্যে আর কোনো মিলই ছিল না। সেটাকেই কাজে লাগায় চতুর ও ধূর্ত পাকিস্তানিরা। বাংলার সরলপ্রাণ মানুষদের ধোঁকা দিয়ে দাস বানিয়ে ফেলে তারা। দেশভাগের পরপরই তারা বাংলার মানুষের হাজার বছরের ভাষা ও সংস্কৃতি বদলে দেওয়ার নীলনকশা করে। কিন্তু ছাত্ররা তা শুরুতেই বুঝতে পারে। ফলে মাতৃভাষায় কথা বলার অধিকার কেড়ে নেওয়ার ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে শুরু হয় তীব্র প্রতিবাদ।
অখণ্ড ভারতের কলকাতায় হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর সঙ্গে রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন তরুণ ছাত্রনেতা শেখ মুজিবুর রহমান। দেশ ভাগের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হিসেবে রাজনীতি শুরু করেন তিনি। দেশের মানুষের ওপর যাতে পাকিস্তানিরা উর্দু ভাষা চাপিয়ে দিতে না পারে, সেজন্য ছাত্রনেতাদের সঙ্গে নিয়ে জনসংযোগ শুরু করেন তরুণ মুজিব। এরপর রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ সারাদেশে ধর্মঘট আহ্বান করা হয়। সেদিন সচিবালয়ের সামনে থেকে শেখ মুজিবসহ আরো অনেক ছাত্রনেতাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ ততক্ষণে ছড়িয়ে পড়ে সারা দেশে। ভাষা আন্দোলনকারীদের মুক্তির দাবিতে উত্তাল হয়ে ওঠে দেশ। ফলে ১৫ মার্চ শেখ মুজিবসহ বাকি সবাইকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয় পাকিস্তান সরকার।
এরপর ১৬ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন শেখ মুজিবুর রহমান। সেখানে জ্বালাময়ী বক্তব্য দেওয়ার পর অ্যাসেম্বলি ঘেরাওয়ের জন্য সবাইকে নিয়ে অগ্রসর হন। পরবর্তীতে শেরে বাংলার মতো বর্ষীয়ান নেতাও শেখ মুজিবের বলিষ্ঠ নেতৃত্বে মিছিলে যোগ দিয়ে পুলিশি নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন।
Last updated on 26/01/2022
Minor bug fixes and improvements. Install or update to the newest version to check it out!
Requisitos
4.1 and up
Categoría
Reportar
বাঙালি জাতির উত্থান
1.0.0 by IRSCALBD
26/01/2022